Logo Logo
  • Academy
  • Admission
  • Job Assistant
  • Skill
  • Course
  • Book
  • Exams
  • Pricing
  • Others
    • Career
    • Forum
    • Blog
    • Dynamic Print
    • Hand Note
    • Study Plan
    • Quran
    • Notices
    • Upload Your Question
    • Current Affairs
    • Create Business Account
light mode
night mode
Sign In
Logo Logo
Academy
  • Home
  • Academy
  • নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪)
  • বাংলা - Bangla
  • সাহিত্য পড়ি সা...
  • কবিতা
Back
বাংলা - Bangla
বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করি মাধ্যম ও উপকরণের ব্যবহার যোগাযোগের নমুনা বিশ্লেষণ বাস্তব ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ প্রমিত ভাষা ব্যবহার করি ধ্বনির উচ্চারণ স্বরধানির বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করি উচ্চারণ ঠিক করি শব্দ ও বাক্যের উচ্চারণ প্রমিত রূপ প্রমিত উচ্চারণ ভাষারূপের পরিবর্তন আঞ্চলিক ভাষা থেকে প্রমিত ভাষায় রূপান্তর করি লিখিত ভাষায় প্রমিত রীতি সাধু রীতির বাক্যকে প্রমিত বাক্যে রূপান্তর সাধু রীতির গদ্যকে প্রমিত রীতিতে রূপান্তর রচনা পড়ি দৃষ্টিভঙ্গি বুঝি প্রায়োগিক লেখা প্রায়োগিক লেখার বৈচিত্র্য পড়ে কি বুঝলাম সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করি বিবরণমূলক রচনা বিবরণমূলক রচনার বৈচিত্র্য পড়ে কি বুঝলাম লেখা নিয়ে মতামত বিবরণমূলক রচনার ধরন তথ্যমূলক রচনা তথ্যমূলক রচনার বৈচিত্র্য পড়ে কি বুঝলাম লেখা নিয়ে মতামত তথ্যমূলক রচনার ধরণ বিশ্লেষণমূলক রচনা বিশ্লেষণমূলক রচনার উপকরণ পড়ে কি বুঝলাম লেখা নিয়ে মতামত এটি কেম বিশ্লেষণমূলক লেখা কল্পনানির্ভর লেখা কল্পনানির্ভর রচনায় বৈচিত্র্য পড়ে কি বুঝলাম লেখা নিয়ে মতামত এটি কেন কল্পনানির্ভর লেখা ব্যাকরণ মেনে লিখতে শিখি শব্দ বিভিন্ন শ্রেণির শব্দের প্রয়োগ শব্দের লগ্নক শব্দের লগ্নক খুঁজি বাক্য উদ্দেশ্য ও বিধেয় খুঁজি শব্দের অর্থ প্রতিশব্দ বসাই গদ্যে রুপান্তর করি বিপরীত শব্দ লিখি বিপরীত শব্দ বসাই বানান ও অভিধান বর্ণানুক্রমে শব্দ সাজাই অভিধানে শব্দ খুঁজি ভুক্তি তৈরি করি বিবরণমূলক ও বিশ্লেষণমূলক রচনা লিখি বিবরণমূলক রচনা লিখি বিশ্লেষণমূলক রচনা লিখি বিবরণমূলক ও বিশ্লেষণমূলক রচনার বৈশিষ্ট্য যাচাই করি বিবরণমূলক ও বিশ্লেষণমূলক রচনা তৈরি করি সাহিত্য পড়ি সাহিত্য লিখি কবিতা কবিতা লিখি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার কাঠামো বুঝি জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি কবিতার বৈশিষ্ট্য যাচাই করি কবিতা লিখি ও যাচাই করি গল্প গল্প লিখি গল্পের কাঠামো বুঝি জীবনের সাথে গল্পের সম্পর্ক খুঁজি গল্পের কাঠামো বুঝি জীবনের সাথে গল্পের সম্পর্ক খুঁজি গল্পের কাঠামো বুঝি জীবনের সাথে গল্পের সম্পর্ক খুঁজি গল্প লিখি ও যাচাই করি প্ৰবন্ধ প্রবন্ধ লিখি প্রবন্ধের গঠন বুঝি জীবনের সঙ্গে প্রবন্ধের সম্পর্ক খুঁজি প্রবন্ধ লিখি ও যাচাই করি নাটক নাটক লিখি নাটকের কাঠামো বুঝি জীবনের সাথে নাটকের সম্পর্ক খুঁজি নাটক করি আলোচনা করি, ভিন্নমত বিবেচনায় নিই

কবিতা (১ম পরিচ্ছেদ)

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বাংলা - Bangla সাহিত্য পড়ি সাহিত্য লিখি | - | NCTB BOOK
2.9k
2.9k
Please, contribute by adding content to কবিতা.
Content

কবিতা লিখি (৬.১.১)

482
482

তোমার জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা কিংবা সাম্প্রতিক কোনো বিষয় যা তোমার মনে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে একটি কবিতা লেখো। তোমার রচিত কবিতাটি শিক্ষক ও সহপাঠীদের সামনে উপস্থাপন করতে পারো।
তোমার লেখা কবিতায় নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো আছে কি না, খুঁজে দেখো-

• কোনো বিষয় বা ভাবকে অবলম্বন করে রচিত কি না?
• লাইনগুলোতে অন্ত্যমিল আছে কি না?
• তাল দিয়ে দিয়ে পড়া যায় কি না?
• উপমা আছে কি না?

কবিতা

বিশেষ কোনো বিষয় বা ভাব নিয়ে কবিতা রচিত হয়। কবিতায় প্রতিফলিত হয় ব্যক্তিমনের আবেগ, অনুভূতি ও উপলব্ধি। কবিতার বাক্যগঠন ও ভাষাভঙ্গি গদ্যের বাক্যগঠন ও ভাষাভঙ্গির চেয়ে আলাদা হয়। কবিতার লাইনকে বলে চরণ এবং অনুচ্ছেদকে বলে স্তবক।
বিভিন্ন ধরনের অলংকার ও ছন্দ কবিতার ভাষাকে সুন্দর করে। নিচে কবিতার অলংকার ও ছন্দ সম্পর্কে
আলোচনা করা হলো।

অলংকার: অলংকার দুই ধরনের: শব্দালংকার ও অর্থালংকার।

শব্দালংকার: কবিতায় প্রতি লাইনের শেষে প্রায়ই অন্ত্যমিল দেখা যায়। এ ধরনের অন্ত্যমিলকে অনুপ্রাস বলে। যেমন: চলি-বলি, হাওয়া-যাওয়া ইত্যাদি। আবার, কখনো কখনো কবিতার চরণের মধ্যে একই ধানির পুনরাবৃত্তি ঘটতে দেখা যায়। যেমন: 'গুরু গুরু মেঘ গুমরি গুমরি গরজে গগনে গগনে'-এখানে 'গ' এবং 'র' ধ্বনির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এই ধরনের পুনরাবৃত্তির নামও অনুপ্রাস। অনুপ্রাস এক ধরনের শব্দালংকার।

অর্ণালংকার: কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়। যেমন: 'রুম বৃদ্ধ ভিখারির রগ-ওঠা হাতের মতন রুক্ষ মাঠ'-এখানে রুক্ষ মাঠকে ভিখারির রগ-ওঠা হাতের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কোনো কিছুর বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলার জন্য অন্য কিছুর সঙ্গে এভাবে তুলনা বা সাদৃশ্য তৈরি করাকে উপমা বলে। উপমা এক ধরনের অর্থালংকার।

দ্বন্দ্বঃ ছন্দ বোঝার জন্য নয়, পর্ব ও মাত্রা সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।
লয় হলো কবিতার গতি। পর্ব হলো কবিতার এক তাল থেকে আরেক তালের মধ্যকার অংশ। আর মাত্রা হলো পর্বের একক। নিচের পদ্যাংশটুকু তাল রক্ষা করে পড়ো এবং খেয়াল করো 

জেল ছাড়িয়ে/দল হারিয়ে গেলাম বনের/দিক
/সবুজ বনের হরিৎ টিয়ে/করে রে ঝিক/মিক
/বনের কাছে/এই মিনতি, ফিরিয়ে দেবে/ভাই,
/আমার মায়ের গয়না নিয়ে ঘরকে যেতে/চাই।

উপরের অংশটুকু অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে না পড়লে শ্রুতিমধুর হয় না। পড়ার এই গতির নাম লয়। আবার বাঁকা দাঁড়ির মাঝখানে থাকা 'জল ছাড়িয়ে', 'দল হারিয়ে', 'গেলাম বনের', 'দিক'-এগুলো এক একটি পর্ব। 'জল ছাড়িয়ে' পর্বে ৪ মাত্রা আছে; যথা: জল+ছা+ড়ি+য়ে। একইভাবে 'দল হারিয়ে' পর্বে ৪ মাত্রা: দল+হারি+য়ে; 'গেলাম বনের' পর্বে ৪ মাত্রা: গে+লাম+ব+নের এবং 'দিক' ১ মাত্রা।

লয়, পর্ব, মাত্রা বিবেচনায় ছন্দ তিন ধরনের: স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত। ছন্দভেদে মাত্রা গণনার ধরন আলাদা হয়ে থাকে।

স্বরবৃত্ত
বাংলা
হন্ম: এটি দ্রুত লয়ের ছন্দ। সাধারণত একেকটি পর্ব হয় ৪ মাত্রার। ছড়ার জন্য উপযোগী বলে একে ছড়ার ছন্দও বলা হয়। যেমন:

/এই নিয়েছে ওই নিল যা
/কান নিয়েছে/চিলে।
/চিলের পিছে ঘুরছি মরে
/আমরা সবাই মিলে।

মাত্রাবৃত্ত ছন্দঃ এই ছন্দের লয় মধ্যম গতির। মাত্রাবৃত্ত ছন্দে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৬ মাত্রার পর্ব হয়। এই ছন্দের মাত্রা-গণনা পদ্ধতি একটু আলাদা। যেমন:

/তোমাতে রয়েছে/সকল কেতাব/সকল কালের/জ্ঞান,
/সকল শাস্ত্র/খুঁজে পাবে সখা খুলে দেখ নিজ/প্রাণ!
/তোমাতে রয়েছে/সকল ধর্ম, সকল যুগাব/তার,
তোমার হৃদয় বিশ্ব-দেউল সকলের দেব/তার।

অক্ষরবৃত্ত ছন্দ: এই ছন্দের লয় বা গতি ধীর। সাধারণত প্রতি পর্বে ৮ ও ৬ মাত্রা দেখা যায়। এই ছন্দের মাত্রা-গণনা পদ্ধতিও আলাদা। বর্ণ গুনে গুনেও এর মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যেমনঃ

/হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহানা
/তুমি মোরে দানিয়াছ/খ্রিষ্টের সম্মান
(কণ্টক-মুকুট শোভা। দিয়াছ, তাপস,
/অসঙ্কোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস;

কবিতা পড়ি ১

গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪) বাংলাদেশের একজন কবি। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে আছে 'রক্তরাগ', 'খোশরোজ', 'হাস্নাহেনা', 'বনি আদম', 'বিশ্বনবী' ইত্যাদি। নিচের 'জীবন বিনিময়' কবিতাটি কবির 'বুলবুলিস্তান' কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো।

পল্লি-মা

গোলাম মোস্তফা

 

পল্লি-মায়ের বুক ছেড়ে আজ যাচ্ছি চলে প্রবাস-পথে

 মুক্ত মাঠের মধ্য দিয়ে জোর-ছুটানো বাষ্প-রথে।

 উদাস হৃদয় তাকিয়ে রয় মায়ের শ্যামল মুখের পানে, 

বিদায়বেলার বিয়োগ-ব্যথা অশ্রু আনে দুই নয়ানে।

স্নেহময়ী রূপ ধরে মা দাঁড়িয়ে আছে মাঠের পরে,

 মুক্ত চিকুর ছড়িয়ে গেছে দিক হতে ওই দিগন্তরে; 

ছেলে-মেয়ে ভিড় করেছে চৌদিকে তার আঙ্গিনাতে, 

দেখছে না সেই সন্তানেরে পুলক-ভরা ভঙ্গিমাতে।

ওই যে মাঠে গোরু চরে লেজ দুলিয়ে মনের সুখে, 

ওই যে পাখির গানের সুখে কাঁপন জাগে বনের বুকে, 

মাখাল মাথায় কান্তে হাতে ওই যে চলে কালো চাষা, 

ওরাই মায়ের আপন ছেলে-ওরাই মায়ের ভালোবাসা।

ওরা সবাই সহজভাবে ঠাঁই পেয়েছে মায়ের কোলে, 

শান্তি-সুখে বাস করে সব, 

কাটায় না দিন গণ্ডগোলে, 

গোরু-মহিষ যে তাঁই চরে, 

শালিক তাহার পাশেই চরে কখনো বা পৃষ্ঠে চড়ে কখনো বা নৃত্য করো

রাখাল ছেলে চরায় খেনু বাজায় বেণু অশখ-মূলে

 সেই গানেরই পুলক লেগে ধানের খেত ওই উঠল দুলে;

 সেই গানেরই পুলক লেগে বিলের জলের বাঁধন টুটে 

মায়ের মুখের হাসির মতো কমল-কলি উঠল ফুটো

দুপুরবেলায় ক্লান্ত হয়ে রৌদ্র-তাপে কৃষক ভায়া

বসল এসে গাছের ছায়ায় ভুঞ্জিতে তার স্নিগ্ধ-ছায়া,

মাথার উপর ঘন-নিবিড় কচি কচি এই যে পাতা,

ও যেন মার আপন হাতে তৈরি করা মাঠের ছাতা।

ঘাম-ভেজা তার ক্লান্ত দেহে শীতল সমীর যেমনি চাওয়া,

পাঠিয়ে দিল অমনি মা তার স্নিগ্ধ-শীতল আঁচল-হাওয়া,

কালো দিঘির কাজল জলে মিটাল তার তৃষ্ণা-জ্বালা,

কোন সে আদি কাল হতে মা রেখেছে এই জলের জালা।

সবুজ ধানে মাঠ ছেয়েছে, কৃষক তাহা দেখলে চেয়ে,

 রঙিন আশার স্বপ্ন এলো নীল নয়নের আকাশ ছেয়ে;

 ওদেরই ও ঘরের জিনিস, আমরা যেন পরের ছেলে, 

মোদের ওতে নাই অধিকার-ওরা দিলে তবেই মেলে

ওই যে লাউয়ের জাংলা-পাতা ঘর দেখা যায় একটু দূরে

 কৃষক-বালা আসছে ফিরে নদীর পথে কলসি পুরে, 

ওই কুঁড়েঘর-উহার মাঝেই যে-চিরসুখ বিরাজ করে,

 নাইরে সে সুখ অট্রালিকায়, নাইরে সে সুখ রাজার ঘরে

কত গভীর তৃপ্তি আছে লুকিয়ে যে ওই পল্লি-প্রাণে,

 জানুক কেহ নাই বা জানুক-সে কথা মোর মনই জানে! 

মায়ের গোপন বিত্ত যা তার খোঁজ পেয়েছে ওরাই কিছু 

মোদের মতো তাই ওরা আর ছোটে নাকো মোহের পিছু।

(সংক্ষেপিত)

 

শব্দের অর্থ

 

Content added By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.২)

285
285

পল্লি-মা' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলানে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও।

জিজ্ঞাসা

জবাব

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 
Content added By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.৩)

547
547

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'পল্লি-মা' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

২। 'ওরাই মায়ের আপন ছেলে-ওরাই মায়ের ভালোবাসা।'- কথাটি বিশ্লেষণ করো।

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

৩। 'পল্লি-মা' কবিতায় কবি গ্রামকে মায়ের সাথে তুলনা করেছেন কেন? 

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৪। কী কী প্রয়োজনে মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে?

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

পল্লি-মা' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১. এই কবিতায় গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসী একজন মানুষের মনের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে।
২. এটি কয়েকটি স্তবকে বিভক্ত একটি সমিল কবিতা। কবিতাটির প্রতি জোড়া চরণের শেষে মিল আছে।
৩. কবিতাটিতে দুই ধরনের অনুপ্রাস আছে: ক. অন্ত্যমিল অনুপ্রাস: পথে-রথে, সুখে-বুকে ইত্যাদি; এবং খ. পুনরাবৃত্তি অনুপ্রাস: 'মুক্ত মাঠের মধ্য দিয়ে'-এখানে 'ম' ধ্বনির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এগুলো শব্দালংকারের উদাহরণ।
৪. কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়েছে। যেমন: 'মায়ের মুখের হাসির মতো কমল-কলি উঠল ফুটে'-এখানে পদ্মফুল ফোটাকে মায়ের হাসির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের অর্থালংকার।
৫. কবিতাটির লয় দ্রুতগতির।
৬. কবিতাটি স্বরবৃত্ত ছন্দে লেখা।
৭. চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:
/পল্লি-মায়ের বুক ছেড়ে আজ যাচ্ছি চলে প্রবাস-পথে
/মুক্ত মাঠের মধ্য দিয়ে জোর-ছুটানো /বাষ্প-রথে।

 

কবিতা পড়ি ২

জসীমউদ্‌দীন (১৯০৩-১৯৭৬) পল্লিকবি হিসেবে পরিচিত। 'নক্সী-কাঁথার মাঠ', 'সোজন বাদিয়ার ঘাট', 'ধানখেত', 'চলে মুসাফির' ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। নিচের 'কবর' কবিতাটি পল্লিকবির 'রাখালী' কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো

 

কবর 

জসীমউদদীন

এইখানে তোর দাদির কবর  ডালিম গাছের তলে,

তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।

 এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ, 

পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।

এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা, 

সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া গেল কারা।

সোনালি উষার সোনামুখ তার আমার নয়ন ভরি

লাঙল লইয়া খেতে ছুটিতাম গাঁয়ের ও পথ ধরি।

যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত

এ কথা লইয়া ভাবিসাব মোরে তামাশা করিত শত।

এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে

ছোটো-খাটো তার হাসি-ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।

বাপের বাড়িতে যাইবার কালে কহিত ধরিয়া পা

'আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজানতলীর গাঁ।' 

শাপলার হাটে তরমুজ বেচি ছ পয়সা করি দেড়ি, 

পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনো হতো না দেরি। 

দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,

 সন্ধ্যাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুর বাড়ির বাটে।

 হেসো না-হেসো না-শোনো দাদু, সেই তামাক মাজন পেয়ে, 

দাদি যে তোমার কত খুশি হতো দেখতিস যদি চেয়ে 

নথ নেড়ে নেড়ে হাসিয়া কহিত,  'এতদিন পরে এলে, 

পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখিজলে।'

 আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়, 

কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়। 

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, 'আয় খোদা! 

দয়াময়, আমার দাদির তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।'

তারপর এই শূন্য জীবনে কত কাটিয়াছি পাড়ি

যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।

শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি, 

গনিয়া গনিয়া ভুল করে গনি সারা দিনরাত জাগি। 

এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,

 গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে। 

মাটিরে আমি যে বড়ো ভালোবাসি,  মাটিতে লাগায়ে বুক, 

আয়-আয় দাদু,  গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।

এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,

 কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু। পরান যে মানে না। 

সেই ফাল্গুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি, 

'বাজান, আমার শরীর আজিকে কী যে করে থাকি থাকি।' 

ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম, 'বাছা শোও',

 সেই শোয়া তার শেষ শোয়া হবে তাহা কি জানিত কেউ? 

গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে, 

তুমি যে কহিলা 'বাজানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?' 

তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে, 

সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে! 

তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দুহাতে জড়ায়ে ধরি, 

তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিত সারা দিনমান ভরি।

 গাছের পাতারা সেই বেদনায় বুনো পথে যেত করে, 

ফাল্গুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো মাঠখানি ভরে। 

থ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ, 

চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক। 

আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,

হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।

গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা, 

চোখের জলের গহিন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।

উদাসিনী সেই পল্লিবালার নয়নের জল বুঝি,

 কবর দেশের আন্ধার ঘরে পথ পেয়েছিল খুঁজি।

 তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ, 

হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ। 

মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, 'বাছারে যাই, 

বড়ো ব্যথা রোলো দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই; 

দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষ্মী আমার ওরে, 

কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।'

 ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন-জলে,

 কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণ-ব্যথার ছলে।

ক্ষনপরে মোরে ডাকিয়া কহিল-'আমার কবর গায়

 স্বামীর মাথার মাথালখানিরে কুলাইয়া সিও বায়।'

 সেই সে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,

 পরানের ব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে। 

জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু-ছায়, 

গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায় লুটায়ে পড়েছে গায়।

 জোনাকি-মেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো, 

ঝিঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো। 

হাত জোড় করে দোয়া মাও দাদু, 'রহমান খোদা। 

আয়, ভেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়া'

(সংক্ষেপিত) 

Content added || updated By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.৪)

254
254

কবর' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলানে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও।

জিজ্ঞাসা

জবাব

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 
Content added By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.৫)

263
263

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'কবর' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

_____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

২। 'যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।'- কথাটি দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

_____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৩। 'কবর' কবিতায় যে সময়ের কথা বলা হয়েছে, সে সময়ে জীবনযাত্রার মান কেমন ছিল?

 

_____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৪। তোমাকে কষ্ট দিয়েছে এমন একটি মৃত্যু-শোকের কথা সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লেখো।

_____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

কবর' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১. এটি একটি কাহিনি কবিতা। কবিতায় একজন বৃদ্ধ পিতামহ তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূর মৃত্যুর বেদনাদায়ক
স্মৃতি তুলে ধরেছেন।
২. এটি কয়েকটি স্তবকে বিভক্ত একটি সমিল কবিতা। কবিতাটির প্রতি জোড়া চরণের শেষে মিল আছে।
কবিতাটিতে দুই ধরনের অনুপ্রাস আছে: ক. অন্ত্যমিল অনুপ্রাস: কত-শত, মিশে-দিশে ইত্যাদি; এবং খ. পুনরাবৃত্ত অনুপ্রাস: সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া গেল কারা'-এখানে 'র' ও 'ড়' ধানির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এগুলো শব্দালংকারের উদাহরণ।
৪. কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়েছে। যেমন: 'সোনার মতন মুখ'-এখানে মুখকে সোনার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের অর্থালংকার।
৫. কবিতাটির লয় মধ্যম গতির।
৬. কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা।
৭. চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:
এইখানে তোর দাদির কবর ডালিম গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জেলে।

 

 

কবিতা পড়ি ৩

ফররুখ আহমদ (১৯১৮-১৯৭৪) বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ কবি। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে আছে 'সাত সাগরের মাঝি', 'সিরাজাম মুনীরা, 'নৌফেল ও হাতেম', 'হরফের ছড়া' ইত্যাদি। নিচের কবিতাটি কবির 'মুহূর্তের কবিতা' কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো।

বৃষ্টি
ফররুখ আহমদ

বৃষ্টি এলো... বহু প্রতীক্ষিত বৃষ্টি:-পদ্মা মেঘনার

 দুপাশে আবাদি গ্রামে, বৃষ্টি এলো পুবের হাওয়ায়, 

বিদগ্ধ আকাশ, মাঠ ঢেকে গেল কাজল ছায়ায়; 

বিদ্যুৎ-রূপসী পরি মেঘে মেঘে হয়েছে সওয়ার।

দিক-দিগন্তের পথে অপরূপ আভা দেখে তার

 বর্ষণমুখর দিনে অরণ্যের কেয়া শিহরায়, 

রৌদ্র-দগ্ধ ধানখেত আজ তার স্পর্শ পেতে চায়, 

নদীর ফাটলে বন্যা আনে পূর্ণ প্রাণের জোয়ার।

 

Content added By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.৬)

275
275

'বৃষ্টি' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলানে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও।

জিজ্ঞাসা

জবান

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 

 

Content added By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.৭)

466
466

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'বৃষ্টি' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

২। 'রুগ্ন বৃদ্ধ ভিখারির রগ-ওঠা হাতের মতন। রুক্ষ মাঠ।'-কবি কেন এমন কথা বলেছেন?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

৩। রৌদ্র-দগ্ধ ধানখেত কীসের স্পর্শ পেতে চায়? কেন পেতে চায়?

 

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

৪। বৃষ্টির সঙ্গে মানুষের জীবনযাপনের সম্পর্ক কী লেখো

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

'বৃষ্টি' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১। শ্রীষ্মের দাবদাহে প্রকৃতির কী অবস্থা থাকে এবং বৃষ্টির ফলে তাতে কোন পরিবর্তন আসে, এই কবিতায় তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

২। এটি একটি সনেট কবিতা। সনেট কবিতা ১৪ চরণের হয়ে থাকে। এই চরণগুলো আবার দুটি স্তবকে বিভক্ত-প্রথম স্তবক ৮ চরণের এবং দ্বিতীয় স্তবক ৬ চরণের। এ ধরনের কবিতায় চরণের শেষে বিশেষ ধরনের মিল থাকে। যেমন, 'বৃষ্টি' কবিতার প্রথম স্তবকে ১ম, ৪র্থ, ৫ম ও ৮ম চরণের শেষে এক ধরনের মিল আছে; আবার ২য়, ৩য়, ৬ষ্ঠ ও ৭ম চরণের শেষে অন্য ধরনের মিল আছে। এছাড়া দ্বিতীয় স্তবকে ৯ম, ১১শ ও ১৩শ চরণে এক ধরনের মিল এবং ১০ম, ১২শ ও ১৪শ চরণে আরেক ধরনের মিল। মিলের এই বিষয়টি ক, খ, গ ও ঘ দিয়ে বোঝানো হলো:

বৃষ্টি এলো বহু প্রতীক্ষিত বৃষ্টিঃ-পদ্মা মেঘনার ক
দুপাশে আবাদি গ্রামে, বৃষ্টি এলো পুবের হাওয়ায়, খ 
বিদগ্ধ আকাশ, মাঠ ঢেকে গেল কাজল ছায়ায়; খ
বিদ্যুৎ-রূপসী পরি মেঘে মেঘে হয়েছে সওয়ার। ক
দিক-দিগন্তের পথে অপরূপ আভা দেখে তার ক
বর্ষণমুখর দিনে অরণ্যের কেয়া শিহরায়, খ 
রৌদ্র-দগ্ধ ধানখেত আজ তার স্পর্শ পেতে চায়, খ 
নদীর ফাটলে বন্যা আনে পূর্ণ প্রাণের জোয়ার। ক
রুগ্ম বৃদ্ধ ভিখারির রগ-ওঠা হাতের মতন গ 
রুক্ষ মাঠ আসমান শোনে সেই বর্ষণের সুর, ঘ 
তৃষিত বনের সাথে জেগে ওঠে তৃষাতপ্ত মন, গ 
পাড়ি দিয়ে যেতে চায় বহু পথ, প্রান্তর বন্ধুর, ঘ 
যেখানে বিস্মৃত দিন পড়ে আছে নিঃসঙ্গ নির্জন গ 
সেখানে বর্ষার মেঘ জাগে আজ বিষণ্ণ মেদুর। ঘ 

৩। কবিতাটিতে দুই ধরনের অনুপ্রাস আছে: ক. অন্ত্যমিল অনুপ্রাস: সওয়ার-জোয়ার, বন্ধুর-মেদুর ইত্যাদি; এবং ঘ. পুনরাবৃত্ত অনুপ্রাস: 'বন্যা আনে পূর্ণ প্রাণের জোয়ার।'—এখানে 'ন' ও 'র' ধানির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এগুলো শব্দালংকারের উদাহরণ।
৪। কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়েছে। যেমন: 'রুগ্ম বৃদ্ধ ভিখারির রগ-ওঠা হাতের মতন'-এখানে রুগ্ন বৃদ্ধ ভিখারির রগ-ওঠা হাতকে রুক্ষ মাঠের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের অর্থালংকার।
৫। কবিতাটির লয় ধীর গতির।
৬। কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা।
৭। চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:

/বৃষ্টি এলো... বহু প্রতীক্ষিত বৃষ্টি:-পদ্মা মেঘনার
/দুপাশে আবাদি গ্রামে, বৃষ্টি এলো পুবের হাওয়ায়, 

/বিদগ্ধ আকাশ, মাঠ/ঢেকে গেল কাজল ছায়ায়;
/বিদ্যুৎ-রূপসী পরি/মেঘে মেঘে হয়েছে সওয়ার।

 

কবিতা পড়ি ৪


আলাউদ্দিন আল আজাদ (১৯৩২-২০০৯) কবিতা, গল্প, নাটক ও উপন্যাস রচনা করেছেন। তাঁর বিখ্যাত বইয়ের মধ্যে আছে 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র', 'কর্ণফুলী', 'ধানকন্যা', 'ভোরের নদীর মোহনায়', 'জাগরণ', 'নরকে লাল গোলাপ' ইত্যাদি। নিচের কবিতাটি কবির 'মানচিত্র' কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো।

স্মৃতিস্তম্ভ
আলাউদ্দিন আল আজাদ

স্মৃতির মিনার ভেঙেছে তোমার? ভয় কি বন্ধু, আমরা এখনো
চার কোটি পরিবার
খাড়া রয়েছি তো। যে-ভিত কখনো কোনো রাজন্য
পারেনি ভাঙতে

হীরের মুকুট নীল পরোয়ানা   খোলা তলোয়ার

খুরের ঝটিকা ধূলায় চূর্ণ যে পদ-প্রান্তে
যারা বুনি ধান

গুন টানি, আর তুলি হাতিয়ার     হাপর চালাই

সরল নায়ক আমরা জনতা    সেই অনন্য।

ইটের মিনার

 ভেঙেছে ভাঙুক। ভয় কি বন্ধু, দেখ একবার আমরা জাগরী 

চার কোটি পরিবার।

এ-কোন মৃত্যু? কেউ কি দেখেছে মৃত্যু এমন, 

শিয়রে যাহার ওঠে না কান্না, ঝরে না অশ্রু? 

হিমালয় থেকে সাগর অবধি সহসা বরং 

সকল বেদনা হয়ে ওঠে এক পতাকার রং এ-কোন মৃত্যু?

 কেউ কি দেখেছে মৃত্যু এমন, বিরহে যেখানে নেই হাহাকার?

 কেবল সেভার হয় প্রপাতের মহনীয় ধারা, 

অনেক কথার পদাতিক ঋতু কলমেরে দেয় কবিতার কাল?

ইটের মিনার ভেঙেছে ভাঙুক। একটি মিনার গড়েছি আমরা

 চার কোটি কারিগর

বেহালার সুরে, রাঙা হৃদয়ের বর্ণলেখায়।
পলাশের আর

রামবনুকের গভীর চোখের তারায় তারায় 

দ্বীপ হয়ে ভাসে যাদের জীবন, যুগে যুগে 

সেই শহিদের নাম

এঁকেছি প্রেমের ফেনিল শিলায়, তোমাদের নামে।
তাই আমাদের

হাজার মুঠির বজ্র শিখরে সূর্যের মতো জ্বলে শুধু এক

শপথের ভাস্কর উ 

 

Content added By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.৮)

285
285

স্মৃতিস্তম্ভ' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলামে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও।

জিজ্ঞাসা

জবান

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 

 

Content added By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.৯)

503
503

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'স্মৃতিস্তম্ভ' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

_______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

২। 'ভয় কি বন্ধু, দেখ একবার আমরা জাগরী। চারকোটি পরিবার।'—কবি কেন এমন বলেছেন?

_______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৩। এই কবিতাটি বাংলাদেশের ইতিহাসের কোন ঘটনা অবলম্বনে রচিতা এ সম্পর্কে তুমি আর কী জানো?

_______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

স্মৃতিস্তম্ভ' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্ররা মেডিকেল কলেজের সামনে শহিদদের সারণে একটি স্মৃতি স্তম্ভ তৈরি করে। সেই স্তম্ভটি পাকিস্তানি শাসকচক্র ভেঙে ফেলে। এর প্রতিক্রিয়ায় কবিতাটি রচিত।
২। এটি কয়েকটি স্তবকে বিভক্ত একটি অমিল কবিতা। কবিতাটির চরণের শেষে মিল নেই।
৩। কবিতাটিতে পুনরাবৃত্ত অনুপ্রাস দেখা যায় 'ভেঙেছে ভাঙুক ভয় কি বন্ধু'-এখানে 'ভ' ধানির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এটি এক ধরনের শব্দালংকার।
৪। কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়েছে। যেমন: 'সূর্যের মতো জ্বলে শুধু এক। শপথের ভাস্কর'-এখানে শপথের আগুনকে প্রজ্বলিত সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের অর্থীলংকার।
৫। কবিতাটির লয় মধ্যম গতির।
৬। কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা।
৭। চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:

স্মৃতির মিনার/ভেঙেছে তোমার? ভয় কি বন্ধু, আমরা এখনো
/চার কোটি পরি/বার
/খাড়া রয়েছি তো। যে-ভিত কখনো কোনো রাজন্য
/পারেনি ভাঙতে

/হীরের মুকুট/নীল পরোয়ানা    খোলা তলোয়ার

/ঘুরের ঝটিকা /ধুলায় চূর্ণ    যে পদ-প্রান্তে

 

কবিতা পড়ি ৫

আহসান হাবীব (১৯১৭-১৯৮৫) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কবি। 'রাত্রিশেষ', 'ছায়াহরিণ', 'সারা দুপুর', 'আশায় বসতি', 'মেঘ বলে চৈত্রে যাবো' তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতার বই। নিচের কবিতাটি কবির 'দু'হাতে দুই আদিন পাথর' কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো।

আমি কোনো আগন্তুক নই
আহসান হাবীব

আসমানের তারা সাক্ষী সাক্ষী 

এই জমিনের ফুল,

এই নিশিরাইত বাঁশবাগান বিস্তর জোনাকি সাক্ষী 

সাক্ষী এই জারুল জামরুল, সাক্ষী

 পুবের পুকুর, তার ঝাকড়া ডুমুরের ডালে স্থির দৃষ্টি

 মাছরাঙা আমাকে চেনে

আমি কোনো অভ্যাগত নই 

খোদার কসম আমি ভিনদেশি পথিক নই 

আমি কোনো আগন্তুক নই।

 আমি কোনো আগন্তুক নই, 

 আমি ছিলাম এখানে, আমি স্বাপ্নিক নিয়মে

 এখানেই থাকি আর

এখানে থাকার নাম সর্বত্রই থাকা-

সারা দেশে।

আমি কোনো আগন্তুক নই।

 এই খর রৌদ্র জলজ বাতাস মেঘ ক্লান্ত বিকেলের 

পাখিরা আমাকে চেনে

 তারা জানে আমি কোনো অনাত্মীয় নই। 

কার্তিকের ধানের মন্ত্ররি সাক্ষী

 সাক্ষী তার চিরোল 

পাতার টলমল শিশির-সাক্ষী জ্যোৎস্নার চাদরে ঢাকা

 নিশিন্দার ছায়া

অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলী 

তার ক্লান্ত চোখের আঁধার-

আমি চিনি, আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন। আমি

জমিলার মা-র

শূন্য খাঁ খী রান্নাঘর শুকনো খালা সব চিনি

 সে আমাকে চেনে।

হাত রাখো বৈঠায় লাঙলে, দেখো 

আমার হাতের স্পর্শ লেগে আছে কেমন গভীর। দেখো

মাটিতে আমার গন্ধ, আমার শরীরে 

লেগে আছে এই স্নিগ্ধ মাটির সুবাস।

আমাকে বিশ্বাস করো, আমি কোনো আগন্তুক নই।

দুপাশে ধানের খেত

 সরু পথ
সামনে ধু ধু নদীর কিনার

 আমার অস্তিত্বে গাঁথা। আমি এই উধাও নদীর

 মুগ্ধ এক অবোধ বালক।

Content added || updated By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.১০)

255
255

'আমি কোনো আগন্তুক নই' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলামে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও

জিজ্ঞাসা

জবাব

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 

 

Content added || updated By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.১১)

428
428

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'আমি কোনো আগন্তুক নই' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

২। 'আমি কোনো আগন্তুক নই।'-কেন কবি এমন কথা বলেছেন?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৩। বাংলাদেশের প্রকৃতি তোমাকে কখনো মুগ্ধ করেছে কি না? কখন, কীভাবে মুগ্ধ করেছে?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৪। মনে করো, ক্লাসে একজন শিক্ষার্থী নতুন ভর্তি হয়েছে। তখন সবাই তাকে এড়িয়ে চলছে, কেউ তার সঙ্গে কথা বলছে না। এর ফলে তার মনে যে বিচ্ছিন্নতাবোধ তৈরি হয়, তা কীভাবে দূর করা সম্ভব বলে তুমি মনে করো?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

'আমি কোনো আগন্তুক নই' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১। বাংলাদেশের মানুষ ও প্রকৃতির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা এই কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে।
২। এটি কয়েকটি স্তবকে বিভক্ত একটি গদ্য কবিতা। কবিতায় চরণের শেষে মিল পাওয়া যায় না। মাকে মাঝে এক চরণের মাঝখানে শুরু হওয়া বাক্য পরের চরণে গিয়ে শেষ হয়েছে।
৩। কবিতাটিতে পুনরাবৃত্ত অনুপ্রাস দেখা যায়: 'আমি চিনি, আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন'-এখানে 'চ', 'জ' ও 'ন' ধধ্বনির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এটি এক ধরনের শব্দালংকার।
৪। কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়েছে। যেমন: 'জ্যোৎস্নার চাদরে ঢাকা'-এখানে জ্যোৎস্নাকে চাদরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের অর্থালংকার।
৫। কবিতাটির লয় ধীর গতির।
৬। কবিতাটি গদ্যছন্দে লেখা। সাধারণ গদ্যের চেয়ে এর বাক্যগঠন আলাদা। আবৃত্তি করার সময়ে এই কবিতার ভাষার মধ্যে এক ধরনের সুর ও সুক্ষ্ম তাল টের পাওয়া যায়।
৭। চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:

/আসমানের তারা সাক্ষী
/সাক্ষী এই জমিনের ফুল, এই

নিশিরাইত/বাঁশবাগান /বিস্তর জোনাকি সাক্ষী
/সাক্ষী এই জারুল জামরুল, সাক্ষী
পুবের পুকুর, তার ঝাকড়া ডুমুরের ডালে স্থির দৃষ্টি
মাছরাঙা /আমাকে চেনে
/আমি কোনো অভ্যাগত নই।
খোদার কসম আমি ভিনদেশি পথিক নই
/আমি কোনো আগন্তুক নই।

 

কবিতা পড়ি ৬

নির্মলেন্দু গুণ (জন্ম ১৯৪৫) বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত কবি। 'প্রেমাংশুর রক্ত চাই', 'না প্রেমিক না বিপ্লবী', 'দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী', 'বাংলার মাটি বাংলার জল' ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বইয়ের নাম। নিচের কবিতাটি কবির 'চাষাভুষার কাব্য' থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো।

স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
নির্মলেন্দু গুণ

একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

 লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

 ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: 'কখন আসবে কবি?' 

এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,

 এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,

 এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না।

তাহলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি? 

তাহলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে,

 ফুলের বাগানে ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি?

জানি, সেদিনের সব স্মৃতি, মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত

 কালো হাত। তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ 

কবির বিরুদ্ধে কবি,

 মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ, 

বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল, 

উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান, 

মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ।

হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি, 

শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি

 একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে

 লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প। 

সেদিন সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর।

 না পার্ক না ফুলের বাগান, এসবের কিছুই ছিল না,

 শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যে রকম, 

সে রকম দিগন্তল্লাবিত 

ধু ধু  মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, 

সবুজে সবুজময়। 

আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল 

এই  ধু ধু মাঠের সবুজে।

কপালে কজিতে লালসালু বেঁধে।

এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,

লাঙল জোয়াল কাঁখে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক, 

পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক।

হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত, 

নিম্নমধ্যবিত্ত, করুণ কেরানি, নারী, বৃদ্ধ, ভবঘুরে

আর তোমাদের মতো শিশু পাতা-কুড়ানিরা দল বেঁধে। 

একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল

প্রতীক্ষা মানুষের: 'কখন আসবে কবি?' 'কখন আসবে কবি?'

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে, 

রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়াবেন।

 তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

হৃদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

 সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?

গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি: 

'এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'

সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।
(সংক্ষেপিত)

Content added By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.১২)

293
293

স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলামে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও।

জিজ্ঞাসা

জবান

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 
Content added By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.১৩)

297
297

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

২। 'একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষা।'-বিশ্লেষণ করো।

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৩। এই কবিতায় 'কবি' হিসেবে কাকে অভিহিত করা হয়েছে? কেন?

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

৪। ইতিহাসের কোন ক্রান্তিলগ্নে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন? এ সম্পর্কে তোমার ধারণা সংক্ষেপে লেখো।

____________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________

 

'স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপটে কবিতাটি রচিত।
২। এটি কয়েকটি স্তবকে বিভক্ত একটি গদ্য কবিতা। কবিতায় চরণের শেষে মিল পাওয়া যায় না। মাঝে
মাঝে এক চরণের মাঝখানে শুরু হওয়া বাক্য পরের চরণে গিয়ে শেষ হয়েছে।
৩। কবিতাটিতে পুনরাবৃত্ত অনুপ্রাস দেখা যায়: 'একখন্ড অখন্ড আকাশ'-এখানে 'ও' ধানির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এটি এক ধরনের শব্দালংকার।
৪। কবিতায় উপমার ব্যবহার হয়েছে। যেমন: 'জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে'-এখানে উদ্যানকে সৈকতের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটি এক ধরনের অর্থালংকার।
৫। কবিতাটির লয় ধীর গতির।
৬। কবিতাটি গদ্য ছন্দে লেখা। আবৃত্তি করার সময়ে এর মধ্যে এক ধরনের সুর ও ভাল টের পাওয়া যায়।
৭। চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:

/একটি কবিতা লেখা হবে/তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা/বসে আছে
ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: 'কখন আসবে কবি?' 

 

 

কবিতা পড়ি ৭

কবিতাটি আমেরিকান কবি রবার্ট ফ্রন্টের (১৮৭৪-১৯৬৩) "স্টপিং বাই উডস অন এ স্লোয়ি ইভিনিং"
কবিতার অনুবাদ। আবুল হোসেন (১৯২২-২০১৪) বাংলাদেশের একজন কবি। তাঁর উল্লেখযোগ্য বই 'নববসন্ত', 'বিরস সংলাপ', 'হাওয়া তোমার কী দুঃসাহস' ইত্যাদি। নিচের কবিতাটি কবির 'অন্য ক্ষেতের ফসল' নামের
কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো। এরপর সরবে আবৃত্তি করো।

বনের ধারে, বরফ-পড়া সাঁঝে
রবার্ট ফ্রস্ট
অনুবাদ: আবুল হোসেন

মনে হয় জানি, এই বনভূমি কার।

 যদিও কাছেই কোনো গ্রামে বাড়ি তার

 সে জানল না থেমে আজ এখানে এখন 

দেখছি বরফে ঢেকে যায় তার বন। 

বছরের সবচেয়ে আঁধার এ সাঁঝে 

 জনে-যাওয়া হ্রদ আর বনানীর মাঝে

 এখানে থামছি কেন ঘোড়াটা আমার ভাবে, 

ধারে কাছে কোনো নেই তো খামার।

লাগামের ঘণ্টি নেড়ে, মাথা করে নিচু

 সে যেন শুধায়, ভুল হয়েছে কি কিছু! 

আর কোনো শব্দ নেই, কেবল বাতাস

 বয় ধীরে, বরফের কুচি ফেলে শ্বাস।

এমন সুন্দর বন গহন, কী ঘনা 

আমার যে কাজ বাকি প্রচুর এখনো। 

ঘুমের আগেই যেতে হবে বহু দূর 

ঘুমের আগেই যেতে হবে বহু দূর।

Content added By
Tamanna

কবিতার কাঠামো বুঝি (৬.১.১৪)

305
305

'বনের ধারে, বরফ-পড়া সাঁঝে' কবিতাটি পড়ার পর নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথম কলামের জিজ্ঞাসাগুলোর জবাব দ্বিতীয় কলামে লেখো। এ কাজের জন্য সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করো এবং শিক্ষকের সহায়তা নাও।

জিজ্ঞাসা

জবাব

অনুপ্রাসের উদাহরণ 
উপমার উদাহরণ 
লয়ের প্রকৃতি 
ছন্দের ধরন 

 

Content added By
Tamanna

জীবনের সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক খুঁজি (৬.১.১৫)

311
311

১০০-১৫০ শব্দের মধ্যে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেখো। এরপর সহপাঠীর সঙ্গে আলোচনা করো এবং প্রয়োজনে তোমার উত্তর সংশোধন করো।

১। 'বনের ধারে, বরফ-পড়া সাঁকে' কবিতায় কবি কী বলতে চেয়েছেন?

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________ 

২। 'ঘুমের আগেই যেতে হবে বহু দূর।' কথাটির তাৎপর্য আলোচনা করো।

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________ 

৩। এই কবিতাটির পরিবেশ ও প্রকৃতির সঙ্গে বাংলাদেশের পরিবেশ ও প্রকৃতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দেখাও।

______________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________________ 

 

'বনের ধারে, বরফ-পড়া সাঁঝে' কবিতার বৈশিষ্ট্য

১। এটি একটি অনুবাদ-কবিতা। এই কবিতায় বাধা-বিপত্তি ও বিরূপ পরিস্থিতি পার হয়ে এগিয়ে চলার কথা
বলা হয়েছে।
২। এটি কয়েকটি স্তবকে বিভক্ত একটি সমিল কবিতা। কবিতাটির প্রতি জোড়া চরণের শেষে মিল আছে।
৩। কবিতাটিতে দুই ধরনের অনুপ্রাস আছে: ক. অন্ত্যমিল অনুপ্রাস: কার-তার, সাঁঝে-মাঝে ইত্যাদি; এবং খ. পুনরাবৃত্ত অনুপ্রাস: 'এমন সুন্দর বন গহন, কী ঘনা'—এখানে 'ন' ধধ্বনির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। এগুলো শব্দালংকারের উদাহরণ।
৪। কবিতাটিতে উপমার ব্যবহার নেই। তবে, এক ধরনের তুলনা আছে। যেমন, 'বরফের কুচি ফেলে শ্বাস'- এখানে বরফের কুচি প্রাণীর মতো শ্বাস ফেলছে। এ ধরনের অর্থালংকারের নাম সমাসোক্তি। সমাসোক্তি অলংকারে বস্তুকে প্রাণীর মতো মনে করা হয়।
৫। কবিতাটির লয় ধীর গতির।
৬। এটি অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লেখা।
৭। চরণগুলোর পর্ব-বিন্যাস এ রকম:

/মনে হয় জানি, এই বনভূমি কার।
যদিও কাছেই কোনো/গ্রামে বাড়ি তার
/সে জানল না থেমে আজ।এখানে এখন
/দেখছি বরফে ঢেকে যায় তার বন।

Content added By
Tamanna

কবিতার বৈশিষ্ট্য যাচাই করি (৬.১.১৬)

330
330

এই পরিচ্ছেদে তোমরা মোট সাতটি কবিতা পড়েছ। কবিতাগুলোর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নিচের ছকটি পূরণ করো। প্রথমটির নমুনা-উত্তর করে দেওয়া হলো। কাজটি প্রথমে নিজে করো; তারপর সহপাঠীদের সঙ্গে মেলাও।

 

Content added By
Tamanna

কবিতা লিখি ও যাচাই করি (৬.১.১৭)

339
339

একটি বিষয় নির্ধারণ করে সেই বিষয় নিয়ে সমিল বা অমিল একটি কবিতা রচনা করো। তোমাদের লেখা কবিতাগুলো নিয়ে শ্রেণিতে একটি কবিতা পাঠের আসর' করো।

Content added By
Tamanna

Read more

গল্প প্ৰবন্ধ নাটক

Self Test

To attend a self test please, login first. click here to login
Login

Add New Bookmark

Fill up the form and submit
To add a bookmark, please login first. click here to login
Login

Error Report

Fill up the form and submit
To report an error please, login first. click here to login
Login

Add Video

Fill up the form and submit
To add a video, please login first. click here to login
Login
©2025 Satt Academy. All rights reserved.
Privacy Policy
SATT ACADEMY
SATT ACADEMY
Continue with Google
Continue with Facebook

or

Forgot password?

Don't have an account? Register

Notification

Avatar

Action

All Notifications

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

User Avatar
Lorem ipsum dolor sit amet consectetur adipisicing elit. Eaque, officia!

Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.

1 hour ago

Promotion
    i

    Login to continue...

    If you need more content, you need to login